মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্ল্যাকমেইল করে অনুব্রত মণ্ডল নলহাটি কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করেছে ঃ ফিরহাদ

আশিস মণ্ডল ও ধীরাজ চট্টোপাধ্যায়, রামপুরহাট, ২৪ মার্চ ঃ মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের নলহাটি প্রার্থী বদল নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যে ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ব্ল্যাকমেইলের কথা অস্বীকার করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যে সমর্থন করেছেন মইনুদ্দিন সামস।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী দীপক চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন মইনুদ্দিন সামস। জয়ের পর পাঁচ বছর তিনি নলহাটিতে পাকাপাকি ভাবে থেকে যান। ছিলেন মানুষের পাশে। ফলে এবারও প্রার্থী হচ্ছেন ধরে নিয়েই দলের সমস্ত কর্মসূচীতে জমায়েত করিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই দেখা যায় নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিংকে। এতেই কান্নায় ভেঙে পরেন মইনুদ্দিন সামস। তিনি নির্দল হয়ে নিজের কেন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেন। মইনুদ্দিনকে প্রার্থী না করা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরহাদ হাকিমের একটি ভিডিও মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নিজামুদ্দিন সামসের ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিওতে ফিরহাদ হাকিমকে হিন্দিতে বলতে শোনা যাচ্ছে, “প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় আমি মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসেছিলাম। আমি জানতাম না প্রার্থী তালিকায় ওর নাম নেই। শেষে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করি মইনুদ্দিন সামসের নাম থাকল না কেন? তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বলেন ‘অনুব্রত মণ্ডল আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে জবরদস্তি ওরা নাম কেটে নতুন নাম ঢুকিয়েছে। আমি কি করব’। আমি তখন বলি ‘আমাদের সবার বড় নেত্রী। আপনি, কি করবেন মানে’? তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাকে সবাইকে ধরে রাখতে হবে’। ফলে এই আপসোস আমারও। কারন মইনুদ্দিন ভালো ছেলে। কোন ঝুট ঝামেলায় থাকত না। কিন্তু ওর টিকিট মিলল না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি থাকি। কিন্তু আমাদের হাতও বাঁধা থাকে। কিন্তু যারা আমাদের হাত একতরফা বেঁধে রাখলে আল্লাহর হুকুমে ভালো কাজ হবে না”। যদিও পরে নিজের মন্তব্য থেকে সরে আসেন ফিরহাদ হাকিম।
অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “মইনুদ্দিন সামস ভালো মানুষ। কিন্তু ওনাকে এলাকার মানুষ চাইছেন না। তাই নতুন প্রার্থী করা হয়েছে। আর ফিরহাদ হাকিমের কষ্ট তো হবেই। কারন মইনুদ্দিন তাঁর এলাকার মানুষ। তবে পাঁচ বছর মইনুদ্দিন এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেনি”।
মইনুদ্দিন সামস বলেন, “যেটা সত্য ঘটনা সেটা ফিরহাদ হাকিমের মুখ থেকে বেরিয়েছে। আমি কোন ঝামেলায় নেই। ফিরহাদ হাকিম পরিস্কার বলেছেন আমি ভালো ছেলে। অনুব্রত মণ্ডলও বলেছেন আমি ভালো ছেলে। আমাকে তৃণমূল কংগ্রেস বিনা কারণে বাদ দিয়েছে। আমাকে বাদ দিয়ে নলহাটির মানুষকে অপমান করা হয়েছে”।