গৃহবধূকে খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন স্বামী। জা ও শ্বশুরের

আশিস মণ্ডল, দুবরাজপুর, ৬ জুন :
গৃহবধূকে খুনের অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা হল স্বামী, জা ও শ্বশুরের। বুধবার বীরভূমের দুবরাজপুর আদালতের প্রথম দ্রুত নিস্পত্তি সম্পন্ন আদালতের বিচারক মোল্লা আসগার আলি ওই নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত গৃহবধূর নাম জুলি বিবি। তার বাপের বাড়ি সিউড়ি থানার করিধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কানাইপুর গ্রামে। ২০১০ সালে দুবরাজপুর থানার ঘাট গোপালপুর গ্রামের আবিদ খানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই গৃহবধূর উপর শ্বশুর বাড়ির লোকজন অত্যাচার করত বলে অভিযোগ মেয়ের বাপের বাড়ির অভিজগ। ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সিউড়ি সদর হাসপাতালে মারা যান জুলি বিবি। গৃহবধুর মা লায়লা বিবি থানায় অভিযোগ করেন তার মেয়েকে শ্বশুর, শাশুড়ি, দুই জা এবং জামাই মিলে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে মেরে ফেলেছে। তার দাবি ছিল শ্বশুর বাড়ির লোকজন যখন তাদের যখন জানায় তখন মেয়ে মৃত প্রায়। তার আগে সে চিকিৎসককে মৃত্যুকালীন জবানবন্দী দিয়েছে। তার পরেই মেয়ে মারা যায়। ওই অভিযোগের ভিতিত্তে মামলা শুরু হয়। তিন বছরের বেশি মামলা চলার পর মঙ্গলবার স্বামী আবিদ খান, জা ফিরোজা বিবি ও শ্বশুর আতিত খানকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক মোল্লা আসগার আলি। তথ্য প্রমানের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়ে যান আরেক জা হামিদা বিবি ও শাশুড়ি জারেয়া বিবি। সরকারি আইনজীবী শ্রীতমা মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিচারক সব পক্ষের বক্তব্য শুনে তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারায় বধূ নির্যাতন এবং ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। তার পরেই এদিন তিনজনের যাবজ্জীবন সাজা ঘসনা করেছেন”। আসামী পক্ষের আইনজীবী রাজেন্দ্র প্রসাদ দে বলেন, “রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব”। এদিকে সাজাপ্রাপ্ত জা ফিরোজা বিবির বাবা ফিরদুন খান বলেন, “আমার মেয়ে সম্পূর্ণ নির্দোষ। ঘটনার দিন মেয়ে আমার বাড়িতেই ছিল। অহেতুক তাকে ফাঁসানো হল”।