নাবালকের তত্ত্ব খারিজ, ১১ জনের যাবজ্জীবন রামপুরহাটে

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১ অক্টোবর ঃ
দুই ভাইকে খুনের অভিযোগে শেষ পর্যন্ত ১১ জনকেই যাবজ্জীবন সাজা দিলেন রামপুরহাট মহকুমা আদালতের দ্রুত নিস্পত্তি সম্পন্ন প্রথম আদালতের বিচারক অনিরুদ্ধ মাইতি। একই সঙ্গে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সুত্রপাত ২০০১ সালের ৩০ জুলাই। জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ওই দিন সকালে বীরভূমের রামপুরহাট থানার বলরামপুর গ্রামে কুপিয়ে খুন করা হয় দুই ভাই রাধাবল্লভ মণ্ডল (৫০) ও গোপীবল্লভ মণ্ডল (৪৫) কে। ওই দিন আসামীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হন আরেক ভাই ব্রজবল্লভ মণ্ডল ও প্রতিবেশী ভাগ্যবতী মণ্ডল। ওইদিনই ১৩ জনের বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃত ও আহতদের খুড়তুতো ভাই কিশোরী মোহন মোহন মণ্ডল। মামলা চলাকালীন কিশোরী মোহন মণ্ডল মারা যান। সত্যপ্রসন্ন মণ্ডল নামে এক অভিযুক্ত ঘটনার পর থেকে ফেরার। তথ্য প্রমানের অভাবে মামলার অন্যতম অভিযুক্ত গদাধর মণ্ডল বেকসুর খালাস পেয়ে যান। বাকি ১১ জনকে বৃহস্পতিবার রামপুরহাট মহকুমা আদালতের দ্রুত নিষ্পত্তি সম্পন্ন প্রথম আদালতের বিচারক অনিরুদ্ধ মাইতি দোষী সাব্যস্ত করেন।
শুক্রবার তাদের সাজা ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু ওইদিন সরকারি আইনিজীবী দেবপ্রসাদ ভট্টাচার্য কিংবা অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় কেউ আদালতে হাজির ছিলেন না। এদিকে আসামীদের পক্ষ নিয়ে আইনজীবী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে পিটিশন করে জানায় আসামীদের মধ্যে একজন নাবালক। সেই আপিল পেয়ে বিচারক দুপুরের দিকে বয়সের প্রমান পত্র জমা করতে নির্দেশ দেন। দুপুরের দিকে আইনজীবী সচিত্র ভোটারপত্র জমা দেয়। কিন্তু বিচারক জানিয়ে দেন জন্ম শংসাপত্র দাখিল করতে হবে। এরপরেই মামলার রায় স্থগিত রেখে ফের সোমবার শুনানি হবে বলে বিচারক জানিয়ে দেন। এদিন ফের ১১ জনকে আদালতে তোলা হয় সাজা ঘোষণার জন্য। কিন্তু এদিন নাবালকের সপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে না পারায় বিচারক প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন।
সরকারি আইনজীবী দেবপ্রসাদ ভট্টাচার্য বলেন, “ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ১৪৯, ১৪৮, ৩২৫, ৩২৬ ধারায় মামলা শুরু করা হয়। এদিন ১১ জনেরই যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন বিচারক”।